ভিক্ষাবৃত্তি করে জমিয়ে বিভিন্ন সময়ে ছেলের কাছে রাখা ৫০ হাজার টাকা চাওয়ায় এবং ছেলের নামে বসত বাড়ি লেখে না দেওয়ায় বৃদ্ধ বাবাকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম ও ডান হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে ছেলে কাজল মিয়াসহ (৪০) তিনজনের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নেত্রকোনা সদর উপজেলার ওই ঘটনার পর বুধবার দায়ের করা মামলায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কাজলের স্ত্রী হেপি আক্তার (৩০) ও হেপির ছোটভাই বেলাল খাঁ (২৭)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিউড়া ইউনিয়নের দুগিয়া গ্রামের বাসিন্দা বাহাজ উদ্দিনের (৭০) তিন ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছেন। কিন্তু সন্তানরা তাকে ভরণপোষণ না করায় তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালান।
প্রায় বছরখানেক আগে বিভিন্ন সময়ে জমানো ৫০ হাজার টাকা তার দ্বিতীয় ছেলে কাজল মিয়াকে ধার দেন। সম্প্রতি ওই টাকা চাইতে গেলে কাজল দেই-দিচ্ছি বলে সময়ক্ষেপণ করেন। এছাড়া কাজল তার বাবার নামে থাকা পাঁচ শতক জায়গায় বসত বাড়িটি তার নামে লেখে দেওয়ার জন্য বাবাকে চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু বাহাজ উদ্দিন এতে রাজি হননি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাহাজ উদ্দিন পাওনা ৫০ হাজার টাকা চাইতে গেলে কাজল ও তার স্ত্রী কোনোরকম টাকা দেবেন না বলে জানিয়ে দেন। এ সময় কাজল বসত বাড়িটি নিজের নামে জোর করে লেখে নিতে চান। বাহাজ উদ্দিন এতে অসম্মতি জানালে কাজল, তার স্ত্রী হেপি ও হেপির ছোট ভাই বেলাল খাঁ তাকে মারধর করেন। এতে ওই বৃদ্ধের ডান হাতটি ভেঙে যায়।
পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ইউনিয়নের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়ে যায়। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যায় হামলার শিকার বাহাজ উদ্দিন বাদী হয়ে নেত্রকোনা মডেল থানায় একটি মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই রাতেই হেপি ও তার ভাই বেলালকে গ্রেফতার করে।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিযুক্ত কাজলের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গ্রেফতার হওয়া দুজনকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামি কাজলকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

0 মন্তব্যসমূহ
A New Comment
Emoji